বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে নিয়ে ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ‘মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বলেছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলিউডের রোমান্টিক কমেডির চেয়েও বাস্তবতার সাথে কম মিল রয়েছে।

শুক্রবার সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টসের ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়। এতে বলা হয়েছে, ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তথাকথিত ‘হাইব্রিড যুদ্ধ’ কৌশল ব্যবহার করছে, যা দীর্ঘদিন ধরে তাদের প্রক্সি হিসেবে কাজ করা শেখ হাসিনাকে সমর্থন দেওয়া এবং বাংলাদেশের জনগণ ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে অসম্মান করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। দেশের যে জনগণ ও প্রতিষ্ঠানগুলো গত জুলাই-আগস্টে স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটিয়েছে, তাকে টার্গেট করা হচ্ছে।

এতে বলা হয়, হাইব্রিড যুদ্ধের অংশ হিসেবে তথ্য পরিচালনা বা ‘অপতথ্য’ ব্যবহার করা হচ্ছে, যাতে লক্ষ্যবস্তুকে অভ্যন্তরীণ এবং তার স্বাভাবিক বন্ধু ও মিত্রদের থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায়। বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা সাধারণত একেবারে মনগড়া একটি গল্প দিয়ে শুরু হয়, যার কোনো বাস্তব ভিত্তি বা প্রমাণ থাকে না, বরং নামহীন ব্যক্তিদের উদ্ধৃতি দিয়ে বানানো হয় এবং তা বন্ধুত্বপূর্ণ বা নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

প্রেস উইং বলেছে, যদি গল্পটি যথেষ্ট চটকদার হয়, তাহলে অন্যান্য সংবাদমাধ্যম এটি তুলে নেবে এবং প্রচারের ফলে এটি বিশ্বাসযোগ্যতা পাবে। একপর্যায়ে, যারা বিশ্ব পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান কিন্তু বিশদ বিশ্লেষণের সময় পান না, তারাও এই গল্পটি সত্য বলে বিশ্বাস করতে পারেন, যা মূলত একজন প্রোপাগান্ডাবিদের কল্পনাপ্রসূত ধারণা ছাড়া আর কিছুই না।

এতে উল্লেখ করা হয়, মিথ্যা প্রচারণা ও অপতথ্যে বিশ্বাস করে মানুষ যখন যার বিরুদ্ধে প্রচার হচ্ছে, তাকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে পদক্ষেপ নিতে শুরু করে, তখন তা পুরোপুরি সফল হয়। এই ক্ষেত্রে, প্রতিপক্ষ হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণ ও তাদের নিজস্ব সার্বভৌম রাষ্ট্র পরিচালনার আকাঙ্ক্ষা। আর স্বেচ্ছায় এই মিথ্যা প্রচারের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছে ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা।

আনন্দবাজারের উদ্দেশে বলা হয়েছে, আপনাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কি প্রকৃত সাংবাদিকতা করবেন, যেখানে সত্য ঘটনা অনুসন্ধান করে তথ্য সংগ্রহ করা হয়, নাকি মিথ্যা প্রচারণার অংশ হিসেবে মিথ্যা গল্প ছড়িয়ে একটি বন্ধুপ্রতীম দেশের সার্বভৌমত্ব ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন করবেন?

এদিকে, সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টসের ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া অপর এক পোস্টে বলা হয়, কিছু ভারতীয় সংবাদপত্র বিশ্বজুড়ে মার্কিন সহায়তা বন্ধ করার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত নিয়ে মিথ্যা ও বিভ্রান্তির প্রচারণা চালাচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত ভারত ও বাংলাদেশসহ সব দেশের জন্য প্রযোজ্য। একটি বিষয় ভারতীয় সংবাদপত্রগুলো জানে না বা ইচ্ছাকৃতভাবে এড়িয়ে যাচ্ছে, তা হল মার্কিন সাহায্য বাংলাদেশের উন্নয়ন ব্যয়ের একটি ক্ষুদ্র অংশের জন্য দায়ী।

এতে আরও বলা হয়েছে, আমরা অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক ঋণদাতাদের তুলনায় মার্কিন সাহায্যের আপেক্ষিক আকারের তথ্য সংকলন করেছি। বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ দ্বারা সংকলিত তথ্য এখানে রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *